ডাউনি মিলডিউ, যা Peronospora destructor নামক রোগজীবাণুর কারণে হয়, এটি পেঁয়াজের একটি মারাত্মক রোগ। ঠান্ডা ও আর্দ্র পরিবেশে এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, বিশেষ করে বর্ষাকালে বা জলাবদ্ধ ক্ষেতে। এই রোগের জীবনচক্র এবং লক্ষণ বোঝা কার্যকর ব্যবস্থাপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
পেঁয়াজের ডাউনি মিলডিউয়ের লক্ষণ
- পাতার বিবর্ণতা: প্রথমে পাতাগুলো ফ্যাকাশে সবুজ হয়, পরে হলুদ হয়ে পড়ে এবং অবশেষে শুকিয়ে যায়।
- ডিম্বাকৃতি ক্ষত: পাতায় বেগুনি বা বেগুনি-নীল রঙের দাগ দেখা যায়।
- তীব্র সংক্রমণ: মারাত্মক সংক্রমণ হলে পেঁয়াজের কন্দ পচে যায়, ফলে ফসল বিক্রিযোগ্য থাকে না।
- কন্দের ক্ষতি: আক্রান্ত কন্দ শুকিয়ে যায় বা অপ্রত্যাশিতভাবে অঙ্কুরোদগম হতে পারে। সংরক্ষণকালীন সময়ে সংক্রমিত কন্দ নরম ও পানিযুক্ত হয়ে পড়ে।
পেঁয়াজের ডাউনি মিলডিউ নিয়ন্ত্রণ কৌশল
১. কৃষি ব্যবস্থাপনা
- ফসল চক্র পরিবর্তন: একই জমিতে বারবার পেঁয়াজ চাষ এড়িয়ে চলুন।
- প্রতিরোধী জাত: ডাউনি মিলডিউ প্রতিরোধী পেঁয়াজের জাত চাষ করুন।
- সঠিক নিষ্কাশন ব্যবস্থা: জমির সঠিক পানি নিষ্কাশন নিশ্চিত করুন যাতে আর্দ্রতা কম থাকে।
- পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা: ফসল কাটার পর আক্রান্ত উদ্ভিদাবশেষ সরিয়ে ফেলুন এবং ধ্বংস করুন।
২. রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ
পণ্য নাম | রাসায়নিক নাম | প্রতি একরে প্রয়োজনীয় মাত্রা |
---|---|---|
Katyayani Meta-Manco | Metalaxyl 8% + Mancozeb 64% WP | 350-400 গ্রাম/একর |
Katyayani Samartha | Carbendazim 12% + Mancozeb 63% WP | 350-400 গ্রাম/একর |
Katyayani Coc 50 | Copper Oxychloride 50% WP | 350 গ্রাম/একর |
Katyayani Dr. Zole | Azoxystrobin 11% + Tebuconazole 18.3% SC | 250-300 মিলি/একর |
সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQs)
Q. পেঁয়াজের ডাউনি মিলডিউ কী?
A. ডাউনি মিলডিউ (Peronospora destructor) হলো এক ধরনের ছত্রাকজাতীয় রোগ, যা পেঁয়াজের পাতায় হলুদ দাগ, ক্ষত এবং কন্দ পচনের কারণ হয়।
Q. কিভাবে ডাউনি মিলডিউ প্রতিরোধ করা যায়?
A. ফসল চক্র পরিবর্তন, প্রতিরোধী জাত ব্যবহার, সঠিক নিষ্কাশন নিশ্চিত করা এবং প্রয়োজন হলে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করে এই রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
Q. ডাউনি মিলডিউ কি পেঁয়াজের বীজের মাধ্যমে ছড়ায়?
A. হ্যাঁ, এই রোগজীবাণু বীজ, ফুল এবং বীজের ডাঁটাতে সংক্রমিত হতে পারে, যার ফলে বীজ সংক্রমণের উৎস হয়ে উঠতে পারে।
Q. আবহাওয়া কি ডাউনি মিলডিউ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে?
A. হ্যাঁ, ঠান্ডা ও আর্দ্র পরিবেশ (১০-১৮°C তাপমাত্রা ও ৮৫%+ আর্দ্রতা) এই রোগের বিস্তার বাড়িয়ে তোলে।